খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ পৌষ, ১৪৩১ | ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কেরানীগঞ্জে রূপালী ব্যাংকে ডাকাতের হানা, ৩ জনের আত্মসমর্পণ
  পিলখানায় হত্যা : ট্রাইব্যুনালে হাসিনাসহ ৫৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
  জুলাই গণহত্যার সময় শেখ হাসিনার নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয় তদন্ত সংস্থায় পলকের স্বীকারোক্তি : চিফ প্রসিকিউটর
ইউনূসকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ

৭১-এর ইস্যুগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি চায় বাংলাদেশ

গেজেট ডেস্ক

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সুবিধামতো সময়ে ইসলামাবাদ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। আর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারকে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা সফরে আমন্ত্রণ জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী। দু’মাস পর মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে বাংলাদেশ সফর করতে পারেন ইসহাক দার। বৃহস্পতিবার মিশরের রাজধানী কায়রোতে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের সাইড লাইনে বৈঠক হয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের মধ্যে। সেই বৈঠকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার পর পারস্পরিক ওই আমন্ত্রণ জানানো হয়। উভয়ে ‘দাওয়াত’ কবুল করেছেন বলে জানা গেছে। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পাকিস্তানকে ১৯৭১ সালের অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধানের তাগিদ দেন বাংলাদেশের অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান ড. ইউনূস।

কায়রোর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত সেই বৈঠকে শাহবাজকে ড. ইউনূস খোলাসা করেই বলেন, একাত্তরের বিষয়গুলো বারবার আসছে। আমাদের সম্পর্ককে সামনে এগিয়ে নিতে এসবের ফয়সালা জরুরি। আসুন, আমরা তা নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত সমাধানে পৌঁছাই। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছেন, জবাবে শেহবাজ শরিফ বলেন, ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারত বিষয়গুলো মীমাংসা করেছে। কিন্তু তারপরও যদি অন্যান্য অমীমাংসিত সমস্যা থাকে, তবে সেগুলো দেখতে পেলে তিনি খুশি হবেন। প্রতি উত্তরে ইউনূস বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিষয়গুলো চিরতরে সুরাহা করা ভাল। তারা ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিদের বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে সম্মত হন। বৈঠকে দুই নেতা চিনি শিল্প এবং ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনার মতো নতুন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারে আগ্রহ ব্যক্ত করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. ইউনূসের দায়িত্ব নেয়ার পর ঘোষিত বৈদেশিক নীতির মূল বৈশিষ্ট্য সার্কের পুনরুজ্জীবনসহ পারস্পরিক স্বার্থ সম্পর্কিত নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। ২০০৬ সালের নোবেল শান্তি বিজয়ী ২০২৬ সালের মধ্যভাগের আগে ‘প্রয়োজনীয় সংস্কার’ এবং সাধারণ নির্বাচন করতে তার সরকারের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন।

ড. ইউনূস বলেন, তিনি সংস্কারের বিষয়ে সংলাপের জন্য একটি ঐকমত্য গঠন কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানান। শরিফ বলেন, আমরা সত্যিই আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার অপেক্ষায় রয়েছি। তিনি সার্ক পুনরুজ্জীবনে ইউনূসের উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং আঞ্চলিক সংস্থার শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

ড. ইউনূস শেহবাজ শরিফকে বলেন, এটি তার অন্যতম অগ্রাধিকার। তিনি বলেন, আমি সার্কের ধারণার একজন বড় অনুরাগী। আমি ইস্যুটি নিয়ে কথা বলেই যাবো। আমি সার্ক নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন চাই। যদিও তা কেবল একটি ফটো সেশনের জন্য হয়ে থাকে। তথাপি এটি একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালিত চিনিকলগুলোকে আরও ভালোভাবে পরিচালনার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রস্তাব দেন। তিনি বাংলাদেশে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের কারণে মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন এবং বলেন, এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হতে পারে বাংলাদেশ। প্রায় একদশক আগে পাঞ্জাবে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানীদের লড়াই বিশ্বমানের বলে প্রশংসিত হয়েছিল। বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইসলামাবাদের কর্মকর্তারা সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন। প্রফেসর ইউনূস শাহবাজ শরিফকে তার সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং আশা করেন পাকিস্তান ও বাংলাদেশ এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!